খেলার খবর

খেলার ধূলায় মাখতে এসেছি

যেভাবে সেমিফাইনালে যেতে পারে বাংলাদেশ

গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা জমিয়ে তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। আচমকা এক ধস নামার আগে ম্যাচটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিল। ২০ বলে দরকার ছিল ৩৫ রান। টাইমাল মিলসের চোট শুধু তাঁকেই বোলিং থেকে সরিয়ে দেয়নি, ক্রিস ওকসের কোটা থেকেও ওভার কমিয়ে এনেছিল। শিশিরের কারণে বোলাররা বল নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় দুজন ডানহাতি বিগ হিটারের সামনে অফ স্পিনার মঈন আলীকে বল দিতে হতো ইংল্যান্ডকে।

সে সময় ইংল্যান্ডের সঙ্গে সঙ্গে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশও। কারণ, এখনো কাগজে-কলমে বাংলাদেশের সেমিফাইনালের আশা বেঁচে আছে। কিন্তু কাল ইংল্যান্ড হারলেই সে আশা থাকত না। ৮ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে শ্রীলঙ্কা হঠাৎ হেরে বসল। বাংলাদেশও পেল অপ্রত্যাশিত এক লাইফলাইন। চলুন দেখে নেওয়া যাক, বাংলাদেশ কীভাবে এখনো সেমিফাইনালে যেতে পারে।

বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ মেলানোর আগে চলুন গ্রুপ-১–এর বর্তমান অবস্থা দেখে নেওয়া যাক।

দল ম্যাচ পয়েন্ট রানরেট
ইংল্যান্ড ৩.১৮৩
দ.আফ্রিকা ০.২১০
অস্ট্রেলিয়া -০.৬২৭
শ্রীলঙ্কা -০.৫৯০
ও.ইন্ডিজ -১.৫৯৮
বাংলাদেশ -১.০৬৯

পয়েন্ট টেবিলের এই দৃশ্য দেখে বাংলাদেশের সম্ভাবনা শূন্য বলেই মনে হতে পারে। কিন্তু গাণিতিক হিসাব–নিকাশে এখনো বাংলাদেশের সুযোগ আছে। এ জন্য অবশ্য এই গ্রুপের বাকি সব ম্যাচের ফলই বাংলাদেশের পক্ষে আসতে হবে। ইংল্যান্ড বাংলাদেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই দ্বিতীয় দল হিসেবে বাংলাদেশকে সেমিতে উঠতে হলে অন্তত ৪ পয়েন্ট পেতে হবে এবং অন্য কেউ যেন ৬ পয়েন্ট না পায়, সে আশাও করতে হবে।

গ্রুপে বাংলাদেশের খেলা সবার আগে শেষ হচ্ছে। ফলে নিজেদের কাজটা করে বাংলাদেশকে দেখতে হবে অন্যরা কী করছে। দেখে নেওয়া যাক, কোন ম্যাচে কোন ফল এলে বাংলাদেশের পক্ষে সেমিফাইনালে যাওয়া সম্ভব।

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা, ২ নভেম্বর
প্রয়োজনীয় ফল:

বাংলাদেশকে জিততেই হবে। সে সঙ্গে জয়টা হতে হবে অনেক বড় ব্যবধানের। রানরেটে দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে। ব্যবধানটা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনার সবচেয়ে ভালো উপায় মুখোমুখি লড়াইয়ে বড় জয়।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া, ৪ নভেম্বর
প্রয়োজনীয় ফল:

বাংলাদেশকে জিততেই হবে। এ জয়ও অনেক বড় ব্যবধানের হতে হবে। এরই মধ্যে ৪ পয়েন্ট পেয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার রানরেট আরও নেতিবাচক করে দেওয়া এবং নিজেদের রানরেট ইতিবাচক করার জন্য এ ছাড়া উপায়ও নেই।

বাংলাদেশের খেলা শেষ হয়ে যাবে আগামী বৃহস্পতিবার। এরপর শুরু হবে প্রত্যাশিত ফলের অপেক্ষা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ-শ্রীলঙ্কা, ৪ নভেম্বর
প্রয়োজনীয় ফল:
দুই দলেরই ২ পয়েন্ট থাকায় মনে হতে পারে, যেকোনো দল জিতলেই হলো। কিন্তু সেটা ভুল। কারণটা একটু পরে ব্যাখ্যা করা হবে। আপাতত এটুকু জেনে রাখুন, এ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার জয়ই কাম্য এবং সেটা যত স্বল্প ব্যবধানে হয়, ততই ভালো।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়া, ৬ নভেম্বর
প্রয়োজনীয় ফল:
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়। অস্ট্রেলিয়া জিতলেই তাদের ৬ পয়েন্ট হয়ে যাবে। আর এটা হলেই বাংলাদেশের সম্ভাবনা শেষ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতলেও তাদের রানরেট এতটাই নেতিবাচক যে ৪ পয়েন্ট পেলেও অনেক পিছিয়ে থাকবে। আর আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার জয় এ কারণেই কামনা করা হয়েছে। কারণ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতলে তখন আবার উইন্ডিজদের পয়েন্ট হতো ৬ এবং বাংলাদেশের আশা শেষ হয়ে যেত।

ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা, ৬ নভেম্বর
প্রয়োজনীয় ফল:
অবশ্যই ইংল্যান্ডের জয়। কারণ, যখনই কোনো প্রতিপক্ষ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়, তখন তার জয়ই আপনার জন্য সুবিধাজনক। আর এ ম্যাচে তো ইংল্যান্ড হারলে দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্ট ৬ হয়ে যাবে। সে কারণে ইংল্যান্ডের অনেক বড় ব্যবধানের জয়ই কাম্য বাংলাদেশের।

সাকিববিহীন বাংলাদেশ দল দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পাবে কি না, সেটা নিয়েই হয়তো অনেকে সন্দিহান। সেখানে এত এত সমীকরণ মিলিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখাকে বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। কিন্তু স্বপ্ন দেখলে বড় স্বপ্ন দেখাই ভালো!