যদিও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কিছুদিন সময় নিয়েছেন। বলেছেন মাস তিনেক দেখে, বুঝেশুনে তিনি টিম ম্যানেজমেন্টের সব পাকাপোক্ত করবেন। তারপরও ক্রিকেট অঙ্গনে দুটি প্রশ্ন খুব উকিঝুঁকি দিচ্ছে। এক. রাসেল ডোমিঙ্গো কি হেড কোচ থাকবেন? দুই. ব্যাটিং কোচ হিসেবে অ্যাশওয়েল প্রিন্সের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে কি?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে পেতে আসলে ফেব্রুয়ারি। কারণ জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে বিপিএল ঠিকমত শুরু হয়ে গেলে প্রায় ৫ সপ্তাহের জন্য জাতীয় দলের অনেক কিছুই ঝুলে যাবে। সেটাই হয়। তাই ধরেই নেওয়া যায়, বিপিএল শেষ হওয়ার আগে কোনোকিছু চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
তারপরও বাংলাদেশের কোচিং প্যানেল নিয়ে নানা কৌতুহল। কিছু নামও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বাজারে। ভারতের সাবেক ওপেনার ওকেরি রমন, ইংল্যান্ডের জেমস ফস্টারের নাম বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের নাম নিয়ে বেশ সাড়াও পড়ে গেছে।
কিন্তু ভেতরের খবর হলো, এদের কারো সঙ্গে বিসিবির সেভাবে যোগাযোগই হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শীর্ষ পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে তেমনটাই জানা গেছে।
তবে একটি খবর নিশ্চিত, ওকেরি রমন আর জেমস ফস্টার আসুন কিংবা নাই আসুন, অন্য একজনের সঙ্গে বিসিবির কথাবার্তা প্রায় পাকা। কোনো নতুন সমস্যার উদ্রেক না হলে হয়তো খুব শিগগিরই তাকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে দেখাও যাবে। তিনি আর কেউ নন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান কোচ জেমি সিডন্স।
এ অস্ট্রেলিয়ান আবার বাংলাদেশের ক্রিকেটে সম্পৃক্ত হতে যাচ্ছেন এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, জেমি সিডন্স আসছেন। আগামী বছর (২০২২) ফেব্রুয়ারির একদম শুরু থেকেই দায়িত্ব পালন করবেন এ অস্ট্রেলিয়ান।
নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে সিডন্সের সঙ্গে বিসিবির কথাবার্তা চূড়ান্ত। চুক্তিও নাকি হয়ে গেছে। তিনিই সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ, লিটন, সৌম্যদের কোচ হয়ে আসছেন। তবে এবার হেড কোচ নয়, ব্যাটিং কোচ হিসেবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে তিন বছর বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করেছেন সিডন্স। ২০০৭ সালের অক্টোবরে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। মাঝে কয়েকবার হেড কোচ হিসেবে তার নাম শোনা গেলেও এবার তিনি আর হেড কোচ হিসেবে নয়, ব্যাটিং কোচ হয়ে আসছেন। শিগগিরই বিসিবি ব্যাটিং কোচ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে সিডন্সের নামটি ঘোষণা করবে।
৫৭ বছর বয়সী জেমি সিডন্স আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুনাম অর্জন করতে না পারলেও অস্ট্রেলিয়ান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পরিচিত মুখ। সেখানে তার ৩৫ টি সেঞ্চুরি আর ৫৩ হাফসেঞ্চুরি সহ ১১ হাজারের ওপর (১১৫৮৭) রান রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একবার মাত্র প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেটা পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৮৮ সালে ওয়ানডেতে।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বড় না হওয়ায় সিডন্স ঝুঁকে পড়েন কোচিংয়ে। ব্যাটিং কোচ হিসেবে তিনি সারাবিশ্বেই সমাদৃত। বাংলাদেশের আশরাফুল, তামিম, মুশফিক, সাকিব ও রিয়াদদের পরিণত হওয়ার পেছনেও আছে এ অস্ট্রেলিয়ানের হাতের ছোঁয়া। ব্যাটিং দুর্বলতা কাটাতে তাই এবার হেড কোচের বদলে সিডন্সকে ব্যাটিং কোচ করার সিদ্ধান্ত বিসিবির।